Saturday, August 13, 2011

স্বাস্থ্যকথা : পর্যাপ্ত মাছ খান সুস্থ থাকুন

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ও রোগ প্রতিরোধে মাংসের চেয়ে মাছ খাওয়া অধিক গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অন্তত ১০টি কারণে নিয়মিত মাছ খেতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
কারণগুলো হলো:
এক :কম চর্বিযুক্ত খাবার হিসাবে মাছ উল্লেখযোগ্যভাবে প্রাণিজ প্রোটিনের বিকল্প। মাছে রয়েছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড নামে পলি আনসেচুরেটেড ফ্যাট যা স্বাস্থ্যপ্রদ। আমাদের মস্তিষ্কের ৬০% অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিড দ্বারা গঠিত। মস্তিষ্কের কোষগুলো সব সময়ই নতুন নতুন ফ্যাটি এসিডের প্রবাহ চায়। মাছে DHA নামের বিশেষ ওমেগা ফ্যাটি এসিড মগজের পরিপুষ্টির জন্য বিশেষভাবে মূল্যবান।
দুই :প্রোটিন মিনারেল্স ও ভিটামিনের অনন্য উত্স হলো মাছ। মাছে পর্যাপ্ত ভিটামিন এ, ডি, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম ও সেলিনিয়াম রয়েছে। সামুদ্রিক মাছ আয়োডিনের বিশেষ উত্স। ছোট ছোট মাছ কাটাসহ খাওয়া যায় বলে দেহ পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম পেয়ে থাকে। অস্থি ক্ষয় বা অষ্টিও পরোসিস রোধে মাছ খাওয়া খুবই প্রয়োজন। এছাড়া মাছের প্রোটিন খুবই সহজপাচ্য।
তিন :মাছের তেল গর্ভবতী মা ও ভ্রূণস্থ  এবং নবজাত শিশুর স্বাস্থ্য বিকাশে খুবই মূল্যবান। শিশুর চোখ ও দৃষ্টিশক্তির স্বাভাবিক বিকাশেও মাছের DHA গুরুত্বপূর্ণ। যেসব মায়েরা গর্ভকালীন সময়ে পর্যাপ্ত মাছ খায় তাদের নবজাত সন্তানের মগজের বিকাশ হয় দ্রুত এবং সন্তানের জন্ম পরবর্তী ঘুম হয় চমত্কার।
চার :হূদ স্বাস্থ্যের জন্য মাছ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রকমারি মাছ খেলে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে। জার্নাল অব দি আমেরিকান মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশন ও নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনের তথ্য অনুযায়ী মাছের ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড হূদপিণ্ডের কোষকে সুরক্ষা দেয়, রক্তের ট্রাই গ্লিসারিডের মাত্রা কমায় এবং রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। নিয়মিত মাছ ভক্ষণ এক্ষেত্রে অনেকটা অ্যাসডিরিনের মত কাজ করে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।
পাঁচ :বিভিন্ন গবেষণা সূত্র অনুসারে জানা যায়, সামুদ্রিক মাছের প্রাপ্ত ফ্যাটি এসিড অস্থি সন্ধির ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে পারে।
ছয় :মাছে সম্পৃক্ত ধরনের চর্বি একেবারেই কম। তাই মাংসের বদলে মাছ খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকে।
সাত :হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত রোগীরা নিয়মিত ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ মাছ খেলে তাদের এ রোগে হঠাত্ মৃত্যুর ঝুঁকি কমে।
আট :ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের হূদস্বাস্থ্য ভাল রাখতে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সপ্তাহে কমপক্ষে দুই দিন মাছ খাওয়া দরকার-এ মন্তব্য হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেল্থ এর ডাক্তার ফ্রাংক এমডির।
নয় :বয়স্কদের মস্তিষ্কের আলঝিমার্স রোগ প্রতিরোধে মাছের ফ্যাটি এসিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
দশ :মাছ খেলে চর্বি কমে। বিজ্ঞানীদের গবেষণায় জানা যায়, মাছসমৃদ্ধ ডায়েট চর্বি তৈরির জন্য দায়ী লেপটিন হরমোনের মাত্রা কমায়।
কায়েদ-উয-জামান
সহকারি অধ্যাপক, জীববিজ্ঞান বিভাগ,

No comments: